প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এত যে প্রাণহানি এর দায় কার? প্রধানমন্ত্রীর এই কথা আমার কাছে বাতাবি লেবুর গল্পের মত মনে হচ্ছে? শুধু তাই নয় এমন আরো অনেকে রয়েছে যারা বেশ কিছু বাতাবি লেবুর গল্প বলেছেন।
গতকাল একজন সাবেক চলচ্চিত্রের কথিত নায়ক বর্তমান সরকারের ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য তিনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে জানালেন গুলির আঘাতে কিছু হয়নি অথচ একই হাসপাতালে বিবিসির রিপোর্টার নিশ্চিত করেছেন যে সেখানে স্নাইপারের মতো গুলিও করা হয়েছে এমনকি যাকে বলা হয় মরণঘাতী।
প্রথম আলোর হিসেবে, সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ২১২ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে ১৭৫ জনের মৃত্যুর বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১৩৭ জনের শরীরে প্রাণঘাতী গুলি ও ২২ জনের শরীরে ছররা গুলির চিহ্ন ছিল।
আজকে আবার হেলমেট সন্ত্রাসীরা নেমেছিল। তাদের ভয়ে বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নিয়েও রক্ষা পায়নি আন্দোলনকারী অল্প বয়সী মেয়েরা। পৈশাচিক ভাবে তাদেরকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে এবং সাধারণ ছাত্রের উপর গুলি করা হয়েছে এর চিত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তাছাড়া বিভিন্ন আবাসিক ভবনের ছাদ থেকেও হেলমেট পরে গুলি করতে দেখা গেছে।
আরেকটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেল সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার লুঙ্গি পরা হেলমেট পরা বেশ কিছু উপলক্ষে একটি ভবনের ছাদ থেকে উদ্ধার করছে। এ বিষয়টি নিয়ে এক চরম উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে মনে হচ্ছে একটি অশুভ ও অসম আচরণ।
মনে হচ্ছে সরকার এবার শিশু এবং তরুণ প্রজন্মকে টার্গেট করেছে। আজ শুক্রবার ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানায় বিক্ষোভের সময় অন্তত ৩২ শিশু নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে ইউনিসেফ। এ ছাড়া অনেক শিশু আহত হয়েছে এবং অনেককে আটক করা হয়েছে। শিশুদের এই মৃত্যু ভয়ানক ক্ষতি। সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানায় ইউনিসেফ। অথচ গ্রেপ্তার থামছে না সরকারের টনক নড়ছে না। বিশ্বে এটি শিশুদের উপর অত্যাচারের একটি কালো অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে।
প্রতিদিন গণগ্রেপ্তার হচ্ছে রিমান্ড হচ্ছে এমনকি অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীদের কারাগারের পরীক্ষা গ্রহণ করার মত সিদ্ধান্ত হচ্ছে কিন্তু সরকার পক্ষের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন – শিক্ষার্থীদের অযথা আটক ও হয়রানি করতে সরকার নিষেধ করেছে।
আজও সিলেটে মৃত্যু, ঢাকায় মৃত্যু প্রতিদিন লাশের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু সরকারের মিথ্যা বলার প্রতিযোগিতা যেন থামছে না । নতুন ডিবি প্রধান এসে আবার বললেন ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা মিথ্যা বলেছে।
মন্ত্রি পলক আজ বলেছেন কয়েক দিন ধরে সহিংসতায় আমাদের সন্তানেরা ছাত্র-ছাত্রীরা এবং পুলিশ নিহত হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে তাদের প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন নাকি সকলেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন?। হায় হায় মন্ত্রী আপনি সমবেদনাটুকু ঠিকমত জানাতে পারেন না।
মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে আন্দোলন আরো বেশি শক্তিশালী হচ্ছে অথচ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এটি প্রশমিত করার কোন উদ্যোক্ত নিচ্ছেনই না বরং বিভিন্ন বক্তব্যে জনমনে অসন্তোষ আরো উসকে দিচ্ছেন।
স্বাধীনতার পরবর্তী এত মৃত্যু জাতি কখনো দেখেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিচার বিভাগ সবকিছুতেই আপনারা কুক্ষিগত করে রেখেছেন। নিম্ন আদালত পুরোপুরি আপনাদের নিয়ন্ত্রণে। কি করে একজন শিক্ষার্থীকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় কি এমন অপরাধ তার? গ্রেফতারের বইয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না তবে কেন এই প্রহসন?
শুরুতেই যেটা বলছিলাম হে অশনি শক্তি আপনারা এখনো বাতাবি লেবুর গল্প বলে যাচ্ছেন অর্থাৎ সঠিক চিত্র আপনারা গ্রহণ করতে পারছেন না বুঝতে পারছেন না কি ঘটাচ্ছেন। এমন চলতে থাকলে কিছুদিন পর এমন গল্পের শিকার আপনারাও হবেন কেননা প্রকৃতি ছাড় দেয় ছেড়ে দেয় না।