সাংবাদিকদের নামে গণহারে ফাঁকা মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে। এই প্রবণতা সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করবে যা কোনো মতেই স্বাধীন ও পেশাদার সাংবাদিকতা এবং ওভার অল গণতন্ত্রের জন্য মোটেও ভাল কিছু বয়ে আনবে না। পাশাপাশি এই প্রবণতা বর্তমান সরকার সম্পর্কে দেশের ভেতরে-বাইরে কোন ভাল বার্তা দেবে না।
কিন্তু এর মানে এই নয় যে, বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশের মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের ভূমিকার পর্যালোচনা হওয়ার প্রয়োজন নেই। অবশ্যই প্রয়োজন আছে। গণতন্ত্র হত্যা, ফ্যাসিবাদের উত্থান এবং মানবাধিকর লঙ্ঘনে মিডিয়ার উল্লেখযোগ্য অংশ ‘মদতদাতা‘ বা ‘বৈধতাদাতা‘র ভূমিকায় ছিলেন- বলে অনেকে মনে করেন। এগুলো তলিয়ে দেখা খুবই জরুরি।
ফাঁকা মামলা দায়ের না করে যে কাজটি করা প্রয়োজন সেটি হলো, গত ১৬/১৮ বছরে দেশের বড় বড় মিডিয়া (পত্রিকা/টিভি/অনলাইন) হাউজ কিম্বা বাঘা বাঘা সাংবাদিকরা কোনভাবে গণতন্ত্র হত্যা, ফ্যাসিবাদের উত্থান এবং মানবাধিকর লঙ্ঘনে মদতদাতার ভূমিকায় ছিলেন কিনা, বা থাকলে কিভাবে কতটুকু ছিলেন সেসব বিষয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা। এরপর সেই শ্বেতপত্রের রিকোমেন্ডেশনের আলোকে কোন ব্যক্তি সাংবাদিক বা সংবাদ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। অথবা কাউকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা করা যেতে পারে।
সরকার ইতোমধ্যে বিগত বছরগুলোর নানান অর্থনৈতিক অপকর্মের শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য কমিটি করে দিয়েছে। ফলে, মিডিয়া ভূমিকা পর্যালোচনায় দেশের নামকরা পেশাদার সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের সদস্যদের সমন্বয়ে এমন একটি কমিটি করে দেয়া যেতে পারে।
গণতন্ত্র হত্যায় মিডিয়ার ভূমিকার পর্যালোচনা এবং কোন আইনগত বা পেশাগত লঙ্ঘন ধরা পড়লে সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বাধীন ও গণতন্ত্রকামী মিডিয়া ছাড়া আপনি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পেতে পারেন না।