জামায়েত, ইসলামিস্ট ও ছাত্ররা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চায়। উভয়ের মূল কারণ একটিই। ব্যালট পেপারে যদি নৌকার ছাপ্পাটাই না থাকে – তাদের ভোট বাড়বে। অন্তত বাড়ার কথা।
এলেক্টরাল পলিটিক্স আর ফেইসবুকের পলিটিক্সে আকাশ পাতাল ফারাক। এলেকশান করতে সারা দেশে আপনার মিনিমাম ১৫-২০ লাখ লোক লাগবে যারা অন্তত ৩ মাস, দিনে আনলিমিটেড সময় পার্টির কাজে ব্যয় করবে। এই ফোর্স তৈরী করা চাট্টিখানা কথা না। ৫-১০ বছরে আপনি পারবেন না। ইমরান খানের লেগেছিলো ২২ বছর।
জামায়েতে ইসলাম এলেক্টরাল পলিটিক্সে এখনো ছোটো দল। ছাত্ররা এখনো দল করেন নি; কিন্তু যখন করবেন – তখন সেটা ছোটো দলই হবে। যেকোনো ছোটো দল চাইবে এলেক্টরাল পলিটিক্সে একটা বিগ চাঙ্ক অফ ভোট – ওপেন হয়ে যাক। মানে ব্যালট পেপারে নৌকা সীলটা না থাকলে কিছু না কিছু ভোট তো তাদের সাইডে যাবে।
পারফেক্টলি আন্ডারস্ট্যান্ডেবল! গণতন্ত্রে ভোটের হিসাব করাটাই স্বাভাবিক। প্রত্যেকটা দলই করবে।
কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করলে কী হবে – এই জিনিসটা আপনাদের বোঝা উচিত। একটা ক্লিয়ার পিকচার থাকা উচিত।
আপনারা আগামী নির্বাচনে এই নিষিদ্ধের সুফল পাবেন। সত্য! কিন্তু এর পরে আর পাবেন না।
আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল না। এটা একটা ধর্ম। এদের কোনো রিমোরস নাই; কোনোদিনও এদের অনুতাপ হবে না। এদেরকে ডীল করার ২টাই রাস্তা। এদেরকে ধরে ধরে বিচার করবেন এবং এদের যে একেনমিক বন্দোবস্ত – সেইটা ডিজরাপ্ট করতে হবে। সব লেভেলে। আপনি যদি রেলেন্টলেসলি কাজটা করতে পারেন – আপনি নতুন রিক্রুট আসাটা নিঃসন্দেহে বন্ধ করতে পারবেন। ১০-১৫ বছরে ন্যাচারাল এট্রিশানে বেশীরভাগ মানিক টাইপ আওয়ামী মারা যাবে। এই কাজে যদি আপনি সিরিয়াস হন – ১০/১৫ বছরে আওয়ামী লীগের সাপোর্ট ক্রিটিকাল মাসের নীচে নামাতে পারবেন। প্রোভাইডেড: নতুন সরকারী দল নিজেই একটা ফ্যাশিষ্ট দল না হয়ে ওঠে।
মনে রাখবেন – আওয়ামীরা এখনো জাঙ্গিয়ার ছবিতে শহীদ আবু সাঈদকে বসিয়ে হাসিঠাট্টা করে। এই সিকনেস যদি ডীল করতে হয় – আমাদেরকে দীর্ঘসময় ধরে মেটিকুলাসলি কাজ করতে হবে।
লিগালি নিষিদ্ধ করলেই ভোটার হিসাবে আওয়ামীরা তো নিষিদ্ধ হবে না। তার ১ ভোট – আপনারও ১ ভোট। আপনি যদি “মজিবেরজাঙ্গিয়া” দল নামে একটা দল করেন – সেই দল জামায়েত ও ছাত্র – উভয়ের চেয়ে বেশী ভোট পাবে। ওদেরকে শুধু Dog Whistle করতে হবে যে এই দলটা শেখ মুজিবের দল – ভেড়ার মতো আওয়ামীরা এদের ভোট দিবে। যেই নামই দেন – মজিবেরজাঙ্গিয়া দলকে তারা ভোট দেবে।
একটা দেশকে অস্থিতিশীল করতে একটা দল লাগে না – লাগে ০.০০১% জনগোষ্ঠী। এই গ্রূপ অফ পিপল সবসময় থাকবে, আওয়ামীদের থাকবে এবং এদেরকে আপনার পুলিস-মিলিট্ৰি দিয়েই কন্ট্রোল করতে হবে। পলিটিক্স দিয়ে আপনি এদেরকে কন্ট্রোল করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগকে যদি আপনি লাইভ রাখেন – চিরকাল মানুষের মনে এই কলঙ্কটা জারী রেখে নতুন রিক্রুট প্রসেস বন্ধ করতে পারবেন। যদি নিষিদ্ধ করেন – দেয়ার ইজ এ ফাইনালিটি।
মজিবেরজাঙ্গিয়া দলকে আপনি কীভাবে নিষিদ্ধ করবেন?
ধরেন যে আপনার ১৫ বছরের ছেলে ফারুকী সাহেবের নতুন সিরিজটা দেখলো (ডেমোক্রেসি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি) কিংবা ২ বছর পর নেটফ্লিক্সে দেখলো আওয়ামী লীগ আয়নাঘর বানিয়ে কীভাবে মানুষ মেরেছে। তার মধ্যে প্রচণ্ড ঘৃণা হোলো। কিন্তু যেই দলটা নিয়ে তার এতো ঘৃণা – সেই দলটাই এগজিস্ট করে না। এইটা ভালো নাকি তার ঘৃণার দলটা একচুয়ালি আছে – এইটা ভালো?
একটু বুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করেন। কেন আওয়ামী লীগ জিন্দা রাখা দরকার। আমার নিজের কথা বলছি না। আপনারা পলিটিক্সে ছোটো দল হিসাবে কোনোভাবেই একটা অরগ্যানিক ঘৃণা waste করতে পারেন না। কেউ করে না আর কি। নিষিদ্ধ করে ফেললে তো আপনি closure এ চলে গেলেন।
আজকে জামায়াতে ইসলামীর কোনো ব্যাগেজ নাই কেন? কারণ গত ১৫ বছর আওয়ামীরা সব ধরনের শাস্তি – ইনক্লুডিং নিষিদ্ধকরণ – দেয়ার কারণে জামায়াতে ইসলামীর এখন আর কোনো ১৯৭১ ব্যাগেজ নাই।
প্রতিটি আওয়ামীকে আজীবন ২০২৪ ব্যাগেজ বহন করতে হবে।
…………………………………
প্রশ্ন হোলো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার মানে কি তাকে এলেকশানে ইনভাইট করা?
এবসোলিউটলি নট!
কোনো বিগত আওয়ামী নেতাকে কোনোভাবেই রাজনীতি করতে দেয়া যাবে না। যারা গণহত্যা ও গণহত্যায় মদদ করেছে তাদেরকে রাজনীতি করতে দেয়ার প্রশ্নই আসে না। উপরন্তু, তাদের বিচার করতে হবে। শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমার-আপনাকে বলতে হবে না। লোকাল মানুষরাই কোনো আওয়ামীকে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। এলেকশান কমিশন যদি চায় – তারাও পারবে না। মেইন রাস্তার ড্রামের ডিব্বা তো দূরে থাকে, কোনো নিরালা ছাদে পিড়ির ওপর দাড়িয়েও তো দেখলাম না কোনো আওয়ামী নেতা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলছে। এতিমরা এতো চিল্লাচিল্লি করলো – জিরো পয়েন্টে এতিমদের জিরো এক্টিভিটিও তো হতে দেখলাম না।
এইটাই ভালো বন্দোবস্ত এবং এইটাই জারি রাখা দরকার।
……………………………
কোনো আওয়ামী কন্টেস্ট করে নাই, তাই ব্যালট পেপারে নৌকা নাই – এই ব্যবস্থাটা আপনাদের জন্য ইনফিনিটলি বেটার। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে ফেললে এই সুবিধাটা আপনারা আর নিতে পারবেন না। শেখ হাসিনা মরলে এবং শেখ পরিবারের বিচার প্রপারলি শেষ হলে এমনিতেই আওয়ামীদের ভোট ১০% এর কাছাকাছি চলে আসবে। নতুন চোররা যদি আওয়ামী নেতৃবৃন্দকে চুরির টাকা সাপ্লাই করতে না পারে – এই দল এমনিতেই ফাংশন করতে পারবে না। আপনি কোনো ধরনের অতিরিক্ত লিগ্যাল স্টেপ/অর্ডন্যান্স ছাড়াই এই ফ্যাশিস্টদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবেন পলিটিকাল ল্যান্ডস্কেপ থেকে। এবং সেটাই সঠিক কাজ। কিন্তু সেজন্য আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে।
মনে রাখবেন – আমাদের আসল চ্যালেঞ্জ আওয়ামী লীগ লিডারশিপ না। তারা হেলিকপ্টারে পালিয়ে গেছে। আসল সমস্যা তাদের ভোটার। বিএনপি-জামাত-ছাত্রদের মধ্যে যদি কার্যকর ঐক্য না থাকে – কোনো না কোনোভাবে তারা ফিরে আসবেই।
আনফরচুনেটলি – অনেক অস্থিরচিত্ত মানুষ সামনে আওয়ামী লীগ না পেলে নিজেদের মধ্যে য়েন্দায়ুন্দি করতে ওন্নেক ভালোবাসেন।
এবং কার্যকর ঐক্য থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হোলো গুড গভর্নেন্স। আগামী সরকারকে কাজের মাধ্যমে দেখাতে হবে যে তারা আওয়ামী জাহেলিয়া থেকে বেটার।
আপনারা যদি এই কাজে ২৫% কম্পিটেন্সও দেখাতে পারেন – আমরা আওয়ামী লীগ অতিক্রম করবো। আমাদের আওয়ামী মেন্টালিটি অতিক্রম করতেই হবে।