স্বৈরাচারের আমলের অনেকেই এখনো স্বপদে বহাল আছেন এমন নিউজ হরহামেশাই ঘুরে বেড়াচ্ছে নিউজফিডে। অনেকে আবার আগে ছিলেন আওয়ামী সমর্থক আর এবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর হয়ে গেছেন বিএনপির বিপ্লবী সমর্থক। অথচ দুইদিন আগেও এরা স্বৈরাচার হাসিনার তোষামোদি করেছেন। এমন একজন হলেন লেফট্যানান্ট কর্ণেল (অবঃ) ইঞ্জিনিয়ার শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে বিভিন্ন কর্মকর্তার পরিবার নিয়ে সফরের বিষয় ছিলো গত স্বৈরাচারের আমলে বহুল সমালোচিত ঘটনাসমূহের একটা। ইনি তার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছেন। গত আগস্টে দায়িত্ব পাওয়ার পর ইতোমধ্যে তার স্ত্রী ও কন্যা শেহজী শাহরিয়ারকে (৪১) নিয়ে তিনি ব্যাংককে ঘুরে এসেছেন বিমানের ফ্রি টিকিটে। অবশ্য বিমানকে দেখিয়েছেন তিনি গিয়েছেন চিকিৎসার জন্যে। তার মেয়ে শেহজী কানাডার নাগরিক। কয়েকদিন পর ফ্রি টিকিটে বাংলাদেশে আসবে তার বড় মেয়ে শারমিন শাহরিয়ার। শারমিনের বয়স প্রায় ৪৮ এবং নিজের ব্যবসা আছে এবং সে আমেরিকান নাগরিক। শুধুমাত্র ফ্রিতে বিমানের ভিআইপি সার্ভিস পাওয়ার জন্যে সে আমেরিকা থেকে কানাডা আসবে। নভেম্বর ডিসেম্বরের এই সময়টাতে রাউন্ড ট্রিপে কানাডা টু বাংলাদেশে সফর করতে লাগে প্রায় ৬,০০০ ডলার বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৬ লক্ষ টাকা! চিন্তা করেন একবার! সরকার ৬ লক্ষ টাকা খরচ করতেসে যে ডিজার্ভ ই করে না!। যেখানে জুলাইয়ের শহীদদের পরিবার মাত্র ২ লক্ষ টাকা করে পাচ্ছে সেখানে এক সফরেই এরা একজন লোক খরচ করছে ৬ লক্ষ টাকা। তার মানে কি তিনজন শহীদের জীবনের মূল্য = শারমিন শাহরিয়ারের একটা ভ্রমণ! নভেম্বরের ২১ তারিখে শারমিন দেশে আসবেন কানাডার টরেন্টো থেকে BG306 ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাসে, এবং ৩০ তারিখে আবার বিজনেস ক্লাসে ব্যাক করবেন। এর জন্যে এক টাকাও দিনি পে করেন নি। তার দুইসন্তান প্রাইভেট স্কুলে পড়ে যেখানে প্রতি মাসে তার সন্তানদের পেছনেই দশ হাজার ডলারের মত খরচ হয়। এত টাকা থাকা সত্ত্বেও তিনি কেন ফ্রি-তে ভ্রমণ করবেন? এইবার তার ভ্রমণের উদ্দেশ্য জমিসংক্রান্ত বিষয়াদি, মানে ব্যাক্তিগত ভ্রমণ। ইতোমধ্যে শারমিন বন্ধুমহলে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন দুই সপ্তাহ পর আবার তিনি বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন। শাহরিয়ার চৌধুরীর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড বলে দেয় পরের ট্রিপেও শারমিন ফ্রিতে দেশে আসবেন। আমার কথা বিশ্বাস না হইলে বিমান বাংলাদেশে খোঁজ নিয়ে দেখেন। শাহরিয়ার সাহেব বা তার কন্যারা যে এসব টিকিটের জন্যে পে করেছে সেটার প্রমান করতে বলেন। বিদেশি নাগরিকদের ভ্রমণের জন্যে কি আমরা ট্যাক্স দেই?
এমনিতেই মুদ্রাস্ফীতি চরন আকার ধারণ করেছে তার মধ্যে চলছে এদের লুটপাটের মহোৎসব। বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটি বেকার বর্তমানে এত বেকার থাকতে বিমানে কিসের জন্যে শাহরিয়ারের মত বুড়ো দুর্নীতিবাজ লোক নিয়োগ দেয়া হবে। শাহরিয়ারের বয়স ৬৮ বর্তমানে তার মত দুর্নীতিবাজের জায়গায় কি একজন তরুণ সৎ কাউকে বসানো যায় না? শাহরিয়ারদের নিয়োগ দিচ্ছে কে?
শেষ করার আগে বলে যাই এতক্ষণ যে বুড়ো ভামের কুকীর্তির কথা বললাম তিনি ফখরুল ইসলামের শ্যালক! এই ফখরুল সাহেব নির্বাচন চাইতে চাইতে মুখে ফেনা তুলে ফেলতেসেন। আর এদিকে বিএনপি ক্ষমতায় আসার আগেই তার সমর্থক ও নেতাদের আত্মীয়রা দুর্নীতি শুরু করে দিসে। তারমানে কি “দুর্নীতির চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত” করবার জন্যে ফখরুল ইসলাম নির্বাচন চাচ্ছেন?