একেকটা মাদ্রাসা বিশেষ করে হেফজখানাগুলো যেন একেকটা টর্চার সেল

আপনারা শুনলে আশ্চর্য হবেন কিন্তু এটাই সত্যি,হেফজখানার শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড ধরা হয় শাস্তির বৈচিত্র্য আর মাত্রার উপর। যে হেফজখানা যত অভিনব পদ্ধতিতে শাস্তি দিতে পারে শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ডে সে তত উর্ধ্বে।

এগুলো কারও থেকে শোনা নয়।আমি নিজেই হেফজখানায় পড়েছি এবং হাফেজ হয়েছি।আমার চোখের সামনেই বহু অমানবিক ঘটনা ঘটেছে।আমি হেফজখানা থেকে বের হয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম জীবনে কখনো আমার কোনো সন্তানকে হেফজখানায় পড়াবো না।এমনকি কোনো আত্মীয় যে তার সন্তানকে হেফজে দিতে চায় আমার কাছে পরামর্শ নিতে আসলে নিরোৎসাহিত করি।

অভিনব শাস্তির একটা উদাহরণ হল শীতকালের কনকনে হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় ফ্যান ছেড়ে দেওয়া।সাধারণত হেফজখানার ছাত্রদেরকে ফজরের অনেক আগেই ঘুম থেকে উঠতে হয়,৩-৪টার দিকে।যদি উঠতে গড়িমসি করে অনেকসময় শাস্তি স্বরূপ নিশীথ রাতে ফ্যান ছেড়ে দেওয়া হতো।

হুজুররা ছাত্রদের ভিতর নানারকম মনস্তাত্ত্বিক ভয় জারি রাখতো।নানারকম গল্পগুজব শুনিয়ে ছাত্রদেরকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করতো, আমরা যা কিছু করছি ভালোর জন্যই করছি। যদি চোখবুঁজে মেনে নিতে পারো তাহলে একদিন বড় কিছু হবে।ছাত্ররাও আল্লাহর গজব আর পরবর্তীতে শাস্তির তীব্রতার ভয়ে সবকিছুই মুখ বুজে সহ্য করে নিতো।

এগুলো জুলুম।স্রেফ জুলুম এবং জুলুম।আমি কখনোই এই জুলুমকে মেনে নিতে পারিনি।

ছাত্রদের শরীরের ওপর ওস্তাদদের এমন অবাধ স্বাধীনতা নেই। এমনকি মা-বাবারও অবাধ স্বাধীনতা নেই।যে দোষের যতটুকু শাস্তি ম্যাক্সিমাম দেওয়া শরীয়ত অনুমোদন করছে এর বাইরে মা-বাবা কিংবা ওস্তাদরা শাসনের নামে যদি অতিরিক্ত শাস্তি আরোপ করে সেটা জুলুম ছাড়া আর কিছু নয়।